Detail

Home - গল্প - গল্প: ‘দাম্পত্যরস’- সফিকুল ইসলাম

গল্প: ‘দাম্পত্যরস’- সফিকুল ইসলাম

অভি সিএনজি থেকে নেমে সোজা ঘরে ঢুকলো।  তনু বরাবরের মতোই স্বামী ঘরে এসে কাপড় ছাড়তে না ছাড়তেই লেবু শরবত হাতে দিল। অভি শরবতটা এক টানে পান করে নিল। ঢুকে গেলো বাথরুমে। শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে আরামে ভিজছে। ভিজছে আর ভাবছে তার বউ কপাল ভালো। তার সবদিক বউ খেয়াল রাখে। যখন যা প্রয়োজন তা হাতের কাছে পায়, পছন্দের রান্না হয় ঘরে, আয়েশ করে খায়। কাপড় স্ত্রী করা থাকে। এটা সেটা যখন যা প্রয়োজন তা প্রয়োজনের আগেই প্রস্তুত থাকে। এসব ভাবতে থাকে আর আরামসে শাওয়ারে নিজেকে ভেজাতে ভেজাতে মিষ্টি মধুর ভাবনায় হারাতে থাকে। তখনও অভি জানে না , কী ঘটতে যাচ্ছে!

তনু ঘরের সব গুছিয়ে রাখে। অভি বাথরুমে গিয়েছে, এ ফাঁকে সে অভির কাপড়চোপড় ব্রিফকেস থেকে খুলে গুছিয়ে রাখছে। আর যে প্যান্ট ও শার্ট পরে এসেছে সেগুলো ধোয়ার জন্য বালতিতে ভেজাবে। ময়লা কাপড় বা অগুছানো ঘর তনুর দুই চোখের দুষমন। বালতিতে কাপড় ভেজানোর আগে শার্ট প্যান্টের পকেট চেক করে নেয়। কারণ টাকা বা জরুরি কাগজ থাকলে তা ভিজে যাবে। প্যান্ট এর পকেট থেকে টাকার বদলে একটি কনডমের প্যাকেট পায়। সেটা সমস্যা না। প্রতিবারই ঢাকা থেকে ফেরার পথে সে কনডম নিয়ে আসে। তনু পিল খেতে পারে না কখনোই। এ নিয়ে অভির সাথে অনেকবার তর্ক হয়েছে। কনডম ছাড়া তনু পছন্দ করে না। আর কনডমসহ অভির পছন্দ না। তবু দুজনের বাহাস শেষে অভি কনডমের ব্যবহার মেনে নেয়। তনু পিল খায় না। কারণ মাথা ঘুরায়, শরীরের অনেক সমস্যা তৈরি হয়।

কনডম সবসময় ঢাকা থেকে আসার সময় নিয়ে আসে। সেটা সমস্যা না।  কিন্তু আজকের কনডমের প্যাকেটটা ছেড়া এবং তিনটির মধ্যে একটি কনডম নেই। সেটা দেখে তনুর মাথা হ্যাক হয়ে যায়। দোকানদার কি কম দিল? সেটাতো হবার কথা না, কারণ প্যাকেট দেখেই তো সে কিনেছে।তবে আরেকটা কনডম কোথায় পড়লো? পড়ার তো কথা না, যদি না খুলে থাকে। যদি খুলে থাকে তবে খুলবে কেন? মাত্রতো বাসায় এলো। তবে কি গত রাতে কোথাও সে ছিল? থাকলে কোথায়? হোটেলেতো ছিল। হোটেলেতো কয়েকঘণ্টা ঘুমালো। সেখানে কনডমের কি কাজ? তবে কি কারো সাথে…………….? তনু আর ভাবতে পারে না। মাথা গরম হয়ে যায়, চান্দিতে আগুন ধরে যায়। কাপড়গুলো ছুড়ে ফেলে দেয়। কনডমের প্যাকেট হাতে নিয়ে বিছানায় শক্ত হয়ে বসে থাকে। আর রাগ ও ক্ষোভের মিশেলে টেনশন আর কল্পনার ডালপালা মেলতে থাকে। ভাবনার কোনো কূলকিনারা পাচ্ছে না।

অভি একটি ব্যাংকে ছোট চাকুরি করে। পরিবার গ্রামে থাকে আর অভি ঢাকা থাকে। প্রতি সপ্তাহে গ্রামে আসে। ঢাকা থেকে কুমিল্লা খুব বেশি দূরে নয়। গত বছরও কুমিল্লাতে পোস্টিং ছিল। এক বছর ধরে ঢাকার হেড অফিসে পোস্টিং। তাই ঢাকায় থাকে। গতরাতে ঢাকা থেকে এসে কুমিল্লায় পৌঁছতে অনেক রাত হয়ে যায়। তাই গভীর রাতে গ্রামে যেতে পারে নি। রাতে কুমিল্লা শহরে একটি হোটেলে কয়েক ঘন্টা ঘুমিয়ে সকালে বাড়িতে আসে। এসেই গোসলে ঢুকে। অভির গোসল থেকে বের হওয়া পর্যন্ত তার অপেক্ষা করতে তর সইছে না। তনু ভাবতেই পারছে না, অভি এরকম কিছু করতে পারে। তার ফেরেশতা তুল্য স্বামীর পক্ষে খারাপ কিছু অসম্ভব। বিশ বছরের সংসার। তিন সন্তান বড় হয়ে গেছে। বয়স ৪৫ পার করেছে দুজনেই। এরকম কিছু করতে পারে না তার স্বামী। কখনো এমন কিছু হতে পারে –এটা কল্পনাও করতে পারছে না তনু। স্বামী স্ত্রীর সংসারে বাস করলে নানান ধরণের সান্নিধ্য বজায় থাকে। সেখানে কিছু ঘটলে টের পাওয়া যায়। মেয়েরা একটু বেশিই টের পায়। সেরকম কিছু কখনোই তনুর মনে হয় নি। কিন্তু আরেকটা কনডম গেলো কোথায়? বিশ বছরের সুখের সংসারে কি তবে আগুন লেগে গেলো? কে সে যে  এ আগুন লাগালো। কত দিন ধরে এ সম্পর্ক চলতেছে? কোথায় পরিচয়? কীভাবে কি হলো? আমি এতদিন ঘুণাক্ষরেও টের পেলাম না। আমাকে ঘুমে রেখে এত বড় প্রতারণা! তনু আর ভাবতে পারছে না।

অভি বাথরুমে থেকে বের হচ্ছে না। শাওয়ার ছাড়ার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। গুনগুন গানও শোনা যাচ্ছে। তনু কয়েকবার নক করেও কোনো রিপ্লাই পাচ্ছে না। দাঁত মুখ খিচে দুটো গালি দিয়েই আবার বিছানায় বসেছে। তবে কি বিয়ের আগে যে সম্পর্ক ছিল তাদের কেউ হবে? অভি তো কখনোই কোনো সম্পর্ক স্বীকার করেনি। অভির দূর সম্পের্কের এক বোনের কাছ থেকে শুনেছিল। বলেছিলো বন্ধু ছিল সব। রুনা নামের একটি মেয়ের বিষয়ে অভির বন্ধুরা খুব খোঁচা দিতো। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে সম্পর্ক ছিল রুনার সাথে। রুনা দেখতে সুন্দরী ছিল। বড়লোকের মেয়ে ছিল। বড় লোকের মেয়েদের তো নানানরকম কাহিনী থাকে। রুনার বাবা অন্যত্র বিয়ে দিয়েছিল রুনার অমতে। সেই রুনার সাথে কি এখন আবার আশনাই! বিয়ের আগে যাই হোক, সেসব নিয়ে তনুর কোনো ভাবনা ছিল না।  বিয়ের পরেতো তনু অভির মধ্যে কোনো বিষয় খেয়াল করেনি।  রুনা হোক  আর যেই হোক তাদের সাথে যোগাযোগ কীভাবে হবে? কোথায় শুরু কোথায় শেষ- কিছুই অনুমান করতে পারছে না তনু। কল্পনার ডালপালা মেলে তনুর মানসিক অবস্থা যা তা।

এর মধ্যে কয়েকবার তনুর শাশুড়ি হাঁক দিয়েছে। একবার এসে ঘুরেও গেছে। বলে গেছে অভি বাথরুম থেকে বের হয়ে খেতে বসবে। ওর খাবার পরিবেশন করে দাও। রান্না তনু নিজেই করেছে। অভির যা খেতে পছন্দ তাই রেঁধেছে। শাশুড়ির ডাকের উত্তরে তনু নরম করে কেবল বলে ‘আসছি মা‘। কিন্তু মনের ভেতর যে ঝড় বইছে তা আর বলতে পারছে না। প্রকাশও করতে পারছে না। সামনে যা আছে তা সব ভেংগে ফেলতে ইচ্ছে করছে। রাগে ক্ষোভে সারা শরীর কাঁপছে। মনে মনে বলছে তোরে আজ জন্মের খাওয়া খাওয়ামু। বাথরুম থেকে বের হয়ে নে। কিন্তু অভির বের হবার কোনো নাম গন্ধ নেই!

অভির বরাবরই গোসলে সময় লাগে। এক ঘন্টার কমে গোসল করতে পারে না। মেয়েদের গোসলে সময় লাগে। কিন্তু পুরুষ মানুষের গোসলে এত সময় লাগে কেন – এ প্রশ্নের কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। অনেক বার ওকে বলা হয়েছে। জরুরি কাজের সময়ও অভি গোসল করে লম্বা সময় নিয়ে। খেতে বসলেও অভির দেরি হয়। ৩০-৪৫ মিনিটের কমে খেতে পারে না। মুখে নাকি পানি আসে না। প্রচুর সময় নেয় সে।  এ নিয়ে অভির মা-বাবাও অনেক বকাঝকা করতো। কোনো লাভ হয় নি। এখন সন্তানরা মাঝে মাঝে গোসলে যেতে পারে না তাদের বাবার গোসলে লম্বা সময় বাথরুম দখল করে রাখার কারণে।

আজও বের হচ্ছে না। তনুর আর তর সইছে না। কখন বের হবে, কখন জিজ্ঞাসা করবে। কখন বিষয়টার সুরাহা করবে। গত কয়েকদিন আগে পত্রিকার একটি নিউজ পড়ে তনুকে শুনিয়েছিল। সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করার কী কী উপকারিতা ইত্যাদি লেখা ছিল। হাসতে হাসতে বলেছিল। তনুও হাসতে হাসতেই উত্তর দিয়েছিল। অভি কি তাহলে ইচ্ছে করেই এসব নিউজ পড়ে শুনিয়েছিল। তলে তলে এতদূর এগিয়ে গিয়েছে? তবে কি অভি বিয়ে করে ফেলেছে? নাকি কেবলই গার্ল ফ্রেন্ড? তনুর ভাবনার দোলাচল যেন খেই হারিয়ে যাচ্ছে। আর পারছে না।

দুই মেয়ে কলেজে গিয়েছে। একটু পরেই আসবে। মেয়েরা আসার আগেই বিষয়টা নিয়ে কথা শেষ করতে হবে। মেয়েদের সামনে এ নিয়ে জেরা করা যাবে না। তনু মত পাল্টায়। মেয়েরা আজ আসুক। মেয়েদেরকে সব দেখাবে। দেখিয়ে তারপর সবার সামনেই অভিকে হেস্তনেস্ত করবে। কোনো ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। ঘরে বিয়ের উপযুক্ত মেয়ে রেখে সে কিনা বাইরে গিয়ে ফুর্তি করে বেড়াবে! বিন্দুমাত্র নৈতিকতা থাকলে বিন্দুমাত্র বিবেচনাবোধ থাকলে অভি তা করতে পারে না। তনুর মন বলছে এটা মিথ্যা। এরকম কিছু অভির দ্বারা হতে পারে না। অভি একজন বিবেকবান মানুষ। সমাজের সবাই তাকে ভালো জানে। তাদের মেয়ে দুজন। প্রজ্ঞা ও পারমিতাও বাবাকে অনেক ভালোবাসে। ওরা জানে ওদের বাবা সেরা বাবা। এরকম মানুষই হয় না। সেই মানুষটা এরকম করতে পারে না। তনু নিজেকে প্রবোধ দেয়।

তাদের বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞানে অনার্স পড়ে। ওর নাম গদ্য। ছেলেও বাবাকে খুব শ্রদ্ধা করে। ছেলেমেয়েদের রেখে অভি অন্য কারো সাথে জড়াতে পারে – এমনটা তনুর ভাবনায় কখনো আসে না। কিন্তু কনডমের প্যাকেটে তিনটা কনডম থেকে আরেকটা কনডম গেলো কোথায়। কনডম গেলো কোথায়, আরেকটি কনডম গেলো কোথায় এই প্রশ্ন তনুর মনে ঘুরতে থাকে। তনুর নিজের জীবনের দিকে তাকায়। তনুর বিয়ের পরে তনু কী কী ভুল বা অন্যায় করেছে তার হিসাব করতে বসে।

তনু ভেবে পায় না কোনো অন্যায়। বড় কী কী অন্যায় করেছে যে কারণে তার স্বামী তার সাথে এমন বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। বিয়ের আগের কথা বাদ। বিয়ের পরে তো তনু কারও সাথে কোনো সম্পর্কে জড়ায় নি। কতজনই কতভাবে আকারে ইংগিতে প্রকাশ করেছে। সেগুলো সে শক্ত হাতে হ্যান্ডেল করেছে। কোনো প্রশ্রয় দেয় নি। সুন্দরী হয়ে জন্মালে পুরুষরা একটু আধটু ফ্লার্টিং করবেই। তনুকেও করেছে , এখনো করে। ঘরে বাইরে, প্রতিবেশিীতে বা দূরের আত্মীয় স্বজন রয়েছে। নানান জনের সাথে নানান সময়ে দেখা হয়েছে। ওসব ফ্লার্টিং হাসতে হাসতে ফেলে দিয়ে স্মার্টলি ইগনোর করেছে। কখনেই বড় কোনো ভুল করে নি। অভির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে নি।

কেবল একবার এক কাজিন বেড়াতে এসেছিল। কয়েকদিন থেকেছিল এখানে। অভিও ছিল। অভি যখন বাজারে বা গ্রামে ঘুরতে যেতো তখন সেই কাজিন খুব বেশি ফ্লার্টিং করেছিল। তনুর মনেও দোলা দিয়েছিল। কোনো একদিন বিকেলে এক ফাঁকে তনুকে ঝাপটে ধরে চুমু দিয়েছিল। তনু হতচকিত হয়ে ছাড়াতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এমনভাবে ধরেছিল ও এত গভীর করে চুমু দিয়েছিল যে তনু ছাড়াতে গিয়েও যেন ছাড়াতে পারে নি – এমন একটা সিচুয়েশনে পৌঁছে গিয়েছিল। তবু মিনিটের মধ্যে তনু নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। নিজের রুমে গিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল। ওই কাজিনকে ওইদিনই বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিল ও আর না আসতে বলেছিল। কারণ তনু নিজের উপরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল। এ অবস্থাকে আরও বেশি প্রশ্রয় দিলে তনুর সংসারে আগুন লেগে যাবে- এটা তনু বুঝতে পেরেছিল। এবং সেভাবেই সে বিষয়টাকে সামলেছে। তবে কখনোই বিষয়টি অভিকে বা অভির পরিবারের কাউকে বলে নি। সেই কাজিনও আর আসে নি।

যতটুকু হয়েছিল ততটুকু প্রতারণা কি না বা বিষয়টা অভির সাথে শেয়ার না করা বিশ্বাসঘাতকতা কিনা তা নিয়ে তনু অনেক ভেবেছে। তনুর অনুসিদ্ধান্ত ছিল এমন যে বিষয়টা শেয়ার করলে অভির মনে একটা ফাটল দেখা দিবে। যেহেতু বিষয়টা আর বাড়বে না সেহেতু অভিকে জানিয়ে মনোমালিন্য বাড়ানো কিংবা সন্দেহের অবকাশ তৈরি করা সমীচীন হবে না- এমন চিন্তা কর্ তনু শেয়ার করে নি।

তনুর সেই ভুলের খেসারত বিধাতা এখন দিয়েছে  কিনা – এটা নিয়ে ভাবতে বসেছে তনু। তনু মেলাতে পারছে না কোন পাপের প্রাশ্চিত্ত আজ পেতে যাচ্ছে। কে তার সংসারের এ সর্বনাশ করলো।

এসবের মধ্যেই অভি বাথরুম থেকে বের হয়েছে। গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে মাথার চুল মুছতেছে। মুছতে মুছতে শরীরের লোশন দিচ্ছে। লোশন দিতে দিতে খেয়াল করছে তনু খাটে বসে আছে আর তার দিকে অগ্নিমূর্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।

ড্রেস পরে অভি বললো ‘‘খুব খিধে পেয়েছে। খাবার দাও‘‘।

খাবার পরে। তুমি এখানে বসো। তোমার সাথে কথা আছে।

কথা পরে বলো। আগে খাবার দাও। বলে অভি ডাইনিংয়ের দিকে যাচ্ছিল।

তনু হ্যাচকা টান মেরে অভিকে এনে খাটে বসালো। টানের ধরণ আর কথার রকমে অভিরও মেজাজ চড়ে যায়। বলে, কী শুরু করছো। কী এমন কথা যে এক্ষুণি শুনতে হবে। আগে খাবার দাও।

এগুলো কী? তনু হাতে কনডমের প্যাকেট দেখায়।

এগুলো কি তুমি চেনো না? প্রশ্ন করার কী হলো।

চেনার বিষয় নয়। কনডমের প্যাকেট ছেড়া কেন?

আমি ছিড়েছি। তাই ছেঁড়া।

তুমি ছিঁড়েছো কেন? কার সাথে ব্যবহার করেছো? কোথায় ব্যবহার করেছো? তনুর চোখে মুখে প্রশ্ন অগ্নিমূর্তি নিয়ে।

প্রশ্ন শুনে ও তনুকে দেখে অভি হাসতে শুরু করে । হা হা করে হাসতে হাসতে ভেঙ্গে পড়ে। হাসি আর থামে না।

তনু আবার চিতকার দিয়ে জিজ্ঞেস করে। হাসি থামাও। হাসি থামিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।

তোমার প্রশ্নের কী উত্তর দিব?

যা ঘটেছে, যার সাথে ঘটেছে তার বিস্তারিত বলো। বলে তনু অভির চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

অভি স্মিত হেসে জবাব দেয়। আমি কনডম ব্যবহার করেছি। কনডম কিনেছি প্রতিবারের মতোই ঢাকা থেকে। তুমি জানো যে গ্রামের বাজার থেকে আমি কনডম কিনি না। গত রাতে কুমিল্লা পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। সেখানে হোটেলে ৪ ঘন্টা ঘুমাই। ভোরে চলে আসি। তবে রাতে হোটেলে ঘুমানোর সময় তোমার কথা মনে হয়েছিল। নিজের হস্ত দিয়ে নিজের কর্ম সারি। সাথে কনডমের সহযোগিতাও নিই। এটাতো স্বাভাবিক বিষয়। এটা নিয়ে তুমি এত রিয়েক্ট করছো কেন?

সত্য বলছো? তনু অভির মুখে দিকে তাকায়।

‘আমি তোমার সাথে মিথ্যা বলি না–তুমি সেটা জানো‘‘ উত্তর দেয অভি।

তনুর শরীর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো ঠান্ডা হয়। তনু অভিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম। আমাকে মাফ করে দাও। অভিও অশ্রুসজল চোখে তনুর চুলে হাত বোলাতে থাকে।

স্বর্গ থেকে একটি দৃশ্য এসে পুরো ঘর জুড়ে খেলা করে। ভালোবাসার আবেশ যত বেশি, উত্তাপও তত বেশি তা প্রমাণ করে।

Share Now
Author

Dr. Shafiqul Islam

(BBA, MBA, DU; Mphil, Japan; PhD, Australia) Deputy Secretary, Government of Bangladesh. Chief Executive Officer, Cumilla City Corporation, Local Government Division, Ministry of LGRD

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Rating*

error: Content is protected !!

My Shopping Cart