আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) নিয়ে আজ বিপিএটিসি, সাভারে সেমিনার ছিল। এর নানান দিক আলোচনা হলো। মেশিন লার্নিং, নেচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, রোবটিকস, কম্পিউটার ভিশন, ডাটা প্রসেসিং, ডিসিশন মেকিং ইত্যাদি বিষয়াদি জানলাম। এর ধরন, এপ্লিকেশন, ব্যবহার, বাংলাদেশে নানান সেক্টরে কীভাবে AI কাজ করছে। অনেক কিছু জানলাম। এও বুঝলাম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমাদের জীবনযাত্রার খোলনলচে পাল্টে দিতে পারে। আরও অনেক পজিটিভ দিকও আলোচনা হলো। কীভাবে কেন কোথায় কোথায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমরা ব্যবহার করতে পারি। আবার এআই ব্যবহারে সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতেও কীনোট স্পিকার বারবার বললেন।
.
যদিও আমি পজিটিভ মানুষ, তবু এআই নিয়ে আমার নেতিবাচক অনুমানই বেশি কাজ করছে। আমার ইনটুশন হচ্ছে AI আমাদের কোনো উপকার করতে পারবে না। মানুষের তৈরি রেভ্যুলুশনারি সব আবিষ্কার মানুষকে নানানভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে। AI নতুন কিছু করবে এমনটা আমি মনে করি না।
মানুষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গণতন্ত্র বা ইত্যাদি তত্ত্ব আবিষ্কার করেছে রাষ্ট্র গঠন ও সমাজ গঠনের জন্য। কিন্তু এসবের নামেই পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ লোক হত্যার শিকার হয়েছে।
মানুষ ধর্মচর্চা করেছে শান্তি আনার লক্ষ্যে। এ ধর্মকে হাতিয়ার করে পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে মানুষই।
আইনস্টাইন পারমানবিক তত্ত্ব আবিষ্কার করেছে মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য। অথচ কোটি মানুষ হত্যার শিকার হলো।
অস্ত্র, আইন, পলিসি ইত্যাদি তৈরি করেছে মানুষ, মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য । অথচ অস্ত্রের শিকার মানুষই বেশি।
মানুষ ইট-পাথর-সিমেন্ট আবিষ্কার করেছে মানুষের উন্নয়নের জন্য। অথচ মানুষ এখন গ্রাম বা নগরকে ইট পাথরের গার্ভেজ বানিয়ে ফেলেছে। প্রতিটি নগরীকে আমার কাছে ডাস্টবিন মনে হয়।
মানুষ শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে হিউজ প্রডাকশনে গিয়েছে মানুষের কল্যাণে। অথচ সারা পৃথিবী এখন কার্বনময়। বাস করার আর যোগ্য নয়।
ইনফরমেশন টেকনোলোজি আমাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মনে হয়, সত্যিকারের কল্যাণ,প্রশান্তি ও মঙ্গলের ক্ষেত্রসমূহে ইনফরমেশন টেকনোলোজি আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইনফরমেশন টেকনোলোজি ব্যবহার ও অপব্যবহার করে মানুষ হত্যা করা, মানুষকে বাকস্বাধীনতাহীন করা, মানুষকে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে রাখা এমনকি মানুষের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ বাড়ানোর অনেক ঘটনা ঘটেছে।
.
সঙ্গতকারণেই আমার ধারণা AI আমাদের উপকারের চেয়ে ক্ষতিই করবে বেশি। কারণ আমরা যা-ই সৃষ্টি করি না কেন তার অপব্যবহারে আমাদের জুড়ি মেলা ভার।
.
পরে এসব AI ফেআই বাদ দিয়ে চলে গেলাম ফুলের দেশে। গোলাপে গোলাপে সয়লাব চারদিক। ফুলেরা আমায় দেখে ভয় পেলো কিনা কে জানে? কারণ মানুষের হাতে আর কোনোকিছুই মঙ্গলকর নয়। ধ্বংস করা মানুষের প্রবৃত্তি। ফুল ছিড়ে থেতলে দিতে মানুষের হাত কাঁপে না।
.
মনে মনে ভাবলাম। হে প্রভূ, আমিও কি মানুষ? আমাকে দিয়েও কি সৃষ্টিজগতের ক্ষতি হতে পারে? আমাকে পবিত্র ফুল করে দাও। কিংবা ফুলের মতো পবিত্র করে দাও।
আচ্ছা, আমরা যে বলি ফুলের মতো পবিত্র। ফুল কি আসলেই পবিত্র? কীভাবে? কেন? মানুষতো নিজেকে সৃষ্টির সেরা দাবি করে! মানুষ কি সৃষ্টির সেরা? সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কার দ্বারা? আর কে! নিশ্চয়ই মানুষ!
