অভিবাদন রীতি
অভিবাদন বা সম্ভাষণের রীতি সারা বিশ্বজুড়ে রয়েছে। রয়েছে রকমফের ও বৈচিত্র্যও। সামাজিক, ঐতিহাসিক, ও ধর্মীয় কারণে কৃষ্টি-কালচারের যে তফাৎ তা এখানেও ধরা পড়ে। বোঝা যায় মুখের অভিব্যাক্তি, অঙ্গভঙ্গি, চোখের ইশারা, ভাবভঙ্গি ইত্যাদি দিয়ে। বাহারী নামও রয়েছে যেমন- সালাম, নমস্কার, আদাব, বা মাথা নোয়ানো, চিক-কিসিং, ফিস্ট বাম্প, হেন্ড শেইক, হ্যান্ড কিসিং, হাগ বা কোলাকুলি, নমস্তে, প্রণাম, নাকে নাক লাগানো, গালে গাল লাগানো, হাত নাড়া, হাই ফাইভ আরও কত কী। প্রতিটি অভিবাদনেরই নিজস্ব ইতিহাস, রুচি, ধর্ম, ও কালচার রয়েছে। রয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রকাশ পদ্ধতি, নিয়ম-কানুন, আদব-কায়দা, বেঞ্চমার্কিং, ও পূর্বনজীর।
তাই যে সমাজেরই হোন, যে ইতিহাসেরই হোন, যে ধর্মেরই হোন না কেন তা অনুসারে অভিবাদন বা সম্ভাষণ যথানিয়মে প্রদান করাই ভদ্রতা ও সভ্যতা।এসব অভিবাদনের মধ্যেও সামাজিক শ্রেণীবিন্যাস প্রকাশ করা হয়। কোন কোন সামাজিকতায় ছোটরা বড়দের দিবে, নিচু উঁচুকে আগে বলবে, জুনিয়র সিনিয়রকে দেখে বাউ করবে। মার্কসের ক্লাস বিভাজনের উদাহরণ এসব অভিবাদনেও রয়েছে!
সালাম দেয়া যেমন ইসলামিক রীতি তেমনি আরও উত্তমরূপে সালামের উত্তর দেয়াও ইসলামিক রীতি। সালাম ছোটবড় যে কেউ যে কাউকে দিতে পারে। সালাম দেওয়া সুন্নত; উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। অন্যান্য ধর্ম বা সামজিকতায়ও অভিবাদনের বিপরীতে সঠিক ও যথাযথ উত্তর দেওয়া কাম্য। এটাই সামাজিকতা, সভ্যতা, বা কালচার। অভিবাদনের উত্তর দেওয়া বা কুশল জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেওয়া এটা মিনিমাম লেভেলের সদাচারের মধ্যে পড়ে।
সালামের জবাবে আরও উত্তমরুপে সালাম, অভিবাদনের জবাবে আরও উত্তমরূপে অভিবাদন, কুশল জিজ্ঞাসার জবাবে আরও উত্তমরুপে কুশলবিনিময় করা আমাদের উচিত। ধর্ম, বর্ণ, দেশ, নির্বিশেষে।
তাই যে কোন অভিবাদনের বিপরীতে যথাযথভাবে উত্তমরুপে জবাব না দিলে আমাদের ব্যক্তিগত পরিচয়, সভ্যতা, সামাজিকতা, কালচার এবং ধার্মিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা অবান্তর হবে না।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )